লেখকঃ হামীম গল্পঃ এটা অন্য কিছু ছিলো ২য় পর্ব
19-10-24 (15:38)
19-10-24 (15:38)
Writer Hamim
#এটা_অন্য_কিছু_ছ
িল
পর্বঃ০২
ভৌতিক লেখকঃ
হামিম।
________________
বিনা দোষে বিড়াল
ছানাটি মারা
যাওয়াতে আমার
প্রচন্ড রকমের
খারাপ লাগছিল।
কিন্তু যা হবার
তাতো হয়েই গেছে
আর কিছু তো করার
নেই।
বাকি পথ আমি আর
সামি কোন কথা
বলিনি। আমি
সামিকে ওর টাকা
বুঝিয়ে দিতে সে
চলে যায়।
আমিও বাসায় এসে
ফ্রেস হয়ে শুয়ে
পড়ি। কিন্তু ঘুম
আসছিল না।
বার বার সেই
বিড়ালের মায়াবী
মুখ আমার চোখের
সামনে ভেসে
উঠছিল।
আফসোস করতে করতে
একসময় আমি ঘুমিয়ে
পড়ি।
পরদিন সকালে আমি
অফিসে যাই এবং
নিয়মিত অফিস
করতে থাকি।
কিছু দিন পর আবারও
বের হতে দেরী
হওয়ায় সামিকে
ফোন দেই।
সামি আমাকে নিতে
আসে। কিন্তু ওকে
কিছুটা বিষন্ন
দেখাচ্ছে।
তার কি হয়েছে
জিজ্ঞাসা করি।
কিন্তু সে কিছু বলতে
চাচ্ছিল না।
আমি ভেবেছিলাম
হয়তো টাকার
সমস্যা। তাই
পাঁচশো টাকার
একটা নোট তাকে
দিতে চাইলে সে
কিছুতেই নিবেনা।
আমিও আর জোর
করিনি। গাড়ি
চলছে আর আমি
বাহিরের দিকে
তাকিয়ে
জনমানবহীন শান্ত
পরিবেশটা উপভোগ
করছি।
এমন সময় সামি বলল,
ওর বাবা খুব অসুস্থ।
কি হয়েছে
জিজ্ঞাসা করতেই
সে গাড়ি থামিয়ে
কেঁদে উঠে।
তার বাবা হুট করে
আজ সকাল থেকে রক্ত
বমি করতে শুরু করে।
ওনাকে হসপিটালে
নিলে ডাক্তার
নানান টেস্ট দেন।
টেস্টে ধরা পড়ে
ওনার লিভার
একেবারেই নষ্ট
হয়ে গেছে।
ডাক্তারও অবাক ।
এই অবস্থায় ওনি
কিভাবে বেঁচে
ছিলেন তা তারা
কিছুতেই বুঝতে
পারছিল না।
বাবার ঔষধ কেনার
টাকা নেই। মুমূর্ষু
বাবাকে সে
এভাবেই ফেলে
গাড়ি নিয়ে বের
হয়েছে যেন ঔষধ
কেনার টাকাটা
অন্তত জোগাড় হয়।
তার কথা শুনে আমি
বলি, আমি কি মরে
গেছি? আমাকে আগে
বলিসনি কেন? তুই
আমাকে বন্ধু মনে
করিস না।
চল তোর বাবাকে
দেখে আসি। আমাকে
হসপিটালে নিয়ে
চল।
যাওয়ার পথে ঔষধ
কিনে নিবি।
আমার কথা শুনে সে
পুনরায় গাড়ি
চালাতে থাকে
হসপিটালের
উদ্দেশ্যে।
আমি তার বাবার
জন্য প্রয়োজনীয়
ঔষধ কিনে
হসপিটালে দেখতে
যাই।
সামির বাবার
অবস্থা দেখে আমি
মুখের ভাষা
হারিয়ে ফেলেছি।
তার বাবার
বিছানার সাদা
চাদর রক্তে ভেজা।
তিনি ক্রমাগত
কেশেই চলেছেন।
আর ওনার মুখ থেকে
প্রচুর পরিমানে
রক্ত ঝরছে।
কাশির সাথে কালো
রক্ত জমাট বাঁধা কি
যেন বেরিয়ে
আসছে।
আমি তখন জলদি
আমার স্ত্রীর গয়না
বন্ধক রেখে তাকে
বিশ হাজার টাকা
দেই।
সামি টাকা নিতে
না চাইলেও আমি
বকাঝকা করে টাকা
দিয়ে আসি।
পরদিন সকালে আমি
ব্যাংকে গিয়ে
একাউন্ট থেকে
টাকা তুলে আমার
স্ত্রীর গয়না
ছাড়িয়ে সামিকে
ফোন দেই।
সে ফোন রিসিভ না
করায় মনের
ভেতরটা খচখচ
করছিল।
তাই আমি তখন চলে
যাই হসপিটালে।
বসকে ফোন দিয়ে
ছুটি নেই তিন
দিনের।
হসপিটালে গিয়ে
দেখি তার বাবার
নীথর দেহের পাশে
বসে বসে সে
কাঁদছে।
আমাকে দেখে সে
জড়িয়ে ধরে
হাউমাউ করে
কাঁদতে শুরু করে।
তার কষ্ট দেখে
আমার বুকটা ফেটে
যাচ্ছিল।
সামির এই অবস্থা
দেখে আমি
স্বার্থপরের মত
আল্লাহর কাছে
প্রার্থনা করে
বলছিলাম হে
আল্লাহ আমার
পরিবারের কাউকে
আমার কাছ থেকে
এভাবে কেড়ে নিও
না।
আমি সইতে পারব
না। আমি মরে
গেলেও আমার দুঃখ
নেই। কিন্তু আমার
পরিবারের কাউকে
তুমি আমার কাছ
থেকে আলাদা করে
নিও না।
আসলে আমি খুব
স্বার্থপর হয়ে
গিয়েছিলাম সে
সময়।
কেননা আমার বন্ধুর
মৃত বাবা যেন
জান্নাতবাসী হন
সে দোয়া না করে
আমি নিজে যাতে
কোন রকম
ক্ষতিগ্রস্ত না হই
সেটা চেয়ে
আল্লাহর কাছে
ভিক্ষা চাচ্ছিলাম।
এবং সেটা নিয়েই
ব্যস্ত হয়ে
পড়েছিলাম।
#Writerhamim
সামির বাবা মারা
যাওয়ার পর আমি
সামিকে কিছুটা
সময় দিতে
লাগলাম।
কারণ সদ্য বাবা
হারানো ছেলেটার
বন্ধু বলতে তো
একমাত্র আমিই
ছিলাম।
আস্তে আস্তে দুই
মাসের মত সময়
অতিবাহিত হয়ে
যায়। আর সময়ের
স্রোতে সব
স্বাভাবিক হতে
থাকে।
কিছু দিন পর সামি
আমাকে তার বাসায়
যাওয়ার জন্য ফোন
দেয়।
আমার অফিস
বৃহস্পতিবার হাফ
থাকায় আমি সেদিন
তার বাড়িতে যাই।
সামি আমাকে তার
রুমে নিয়ে গিয়ে
কিছু কথা বলে ।
যেগুলো এরকম –
ভাই তোকে কিছু কথা
বলবো। যদি তুই
আমাকে অবিশ্বাস
না করিস।
যেদিন রাস্তায় ঐ
বিড়ালের মৃত্যু হয়
সেদিন থেকে আমি
প্রতি রাতে সেই মৃত
বিড়ালের পাশে
দাড়ানো সাদা
বিড়ালটিকে দেখতে
পাই।
তার চোখ দিয়ে
পানি ঝরছে। আর সে
ঘৃনা নিয়ে আমার
দিকে তাকিয়ে
থাকে।
তার কষ্ট আমি অনুভব
করতে পারি। আর
আমার বাবা মারা
যাওয়ার পর থেকে
আরও বেশি অনুভব
করছি।
আমি ঘুমুতে
পারিনা। খেতে
পারিনা। গাড়ি
চালাতে পারিনা।
আমি কি পাগল হয়ে
যাচ্ছি?!!
আমার সাথে কিসব
ঘটে চলেছে ভাই?!!
এসব বাবাকে
জানিয়েছিলাম
কিন্তু বাবা তো আর
আমাকে শান্তনা
দেবার জন্য বেঁচে
নেই।
এমন কেউ নেই যার
সাথে শেয়ার
করবো।
প্রথমে মা কে
বলেছি। কিন্তু মা
এসবকে মনের ভুল
বলে ভুলে যেতে
বলেন।
তাই তোকে ডেকে
বললাম। তুই বল আমি
এখন কি করব?!
সামির কথা শুনে
আমার চোখের
সামনে হঠাৎ করে
সেই বিড়ালের
চেহারা ভেসে
উঠে।
আমি যেন অন্য এক
জগতে চলে যাই।
যেখানে সবকিছু
সাদাটে
দেখাচ্ছিল।
আর ঘন কুয়াশার
চাদরে আমি এক
ফুটফুটে বিড়ালের
বাচ্চা দেখতে
পাই।
যার সাথে অন্য
একটি বয়স্ক বিড়াল
খেলা করছে।
বাচ্চা বিড়ালটি
বারবার বয়স্ক
বিড়ালটির উপর
উঠে যাচ্ছিল।
আর বয়স্ক বিড়ালটি
তাকে নিয়ে হেঁটে
যাচ্ছিল।
যেন বাবা তার
সন্তানকে কাঁদে
নিয়ে হেঁটে
চলেছে।
চলবে....
---------------
---------------
---------------
------------
লেখক পরিচিতিঃ
নামঃ আয়মান
কায়েস হামিম।
জন্মঃ ১৫/০৯/২০০৫
বাসাঃ ঈশ্বরগঞ্জ।
বাবার নামঃ ফজলুল
হক আকন্দ।
মায়ের নাম:
হাসিনা সুলতানা
শিউলি।
পেশাঃ HSC
পরিক্ষার্থী।
পেইজঃ Writer Hamim
আমরা চার ভাই।
বোন ৩ জন। দুইজন
মাদ্রাসাই পড়ে।
আর আমি আর আমার
ছোট ভাই কলেজে
পড়ি একই ক্লাসে।
---------------
---------------
---------------
------------?