লেখকঃ হামিম গল্পঃ এটা অন্য কিছু ছিলো পর্ব ১
19-10-24 (15:32)
19-10-24 (15:32)
Writer Hamim
একদিন রাতে শুয়ে
আছি আর নিজের
জীবন নিয়ে
ভাবছি। এমন সময়
আমার রুমে হালকা
আলোর উপস্থিতি
টের পাই।
দেখি বিড়ালটি
দাঁড়িয়ে আছে যে মৃত
বিড়ালটির পাশে
বসে কান্না
করেছিল।
আজ তার চোখে পানি
নেই। সে
কিছুক্ষণের মধ্যেই
একটা মানুষের
আকৃতি ধারণ করে।
এবং আমার সাথে
যেন কথা বলতে শুরু
করল। সে মানুষটি
আমাকে বলছিল,
কেমন আছেন আপনি?
একটি বিড়াল
ছানার দুর্ঘটনায়
আমার এবং আমার
বন্ধুর জীবন ও
আমাদের দুই
পরিবার পুরোপুরি
তছনছ হয়ে যায়।
(আসুন এবার গল্পে
ফেরা যাক)
আমি হামিম। একটা
বেসরকারী
প্রতিষ্ঠানে চাকরি
করি। আমার
পরিবারে মা বাবা,
স্ত্রী ও দুই কন্যা
ছিল। আমার বড়
মেয়ের নাম ছিল
আফিয়া আর ছোট
মেয়ের নাম
সাফিয়া।
খুব সুন্দর ছিল আমার
এই ছোট্ট পরিবার।
বাবা মায়ের
একমাত্র সন্তান
আমি। আর তাই বাবা-
মা, স্ত্রী-কন্যা
নিয়ে আমার
পরিবার ছিল লাখে
একটি।
একটি অনিচ্ছাকৃত
ভুল আমার জীবনকে
একেবারে তছনছ
করে দিয়ে গেছে।
আর আমার এই সুন্দর
পরিবারকে কেড়ে
নিয়েছে আমার
জীবন থেকে।
ঘটনাটি আজ থেকে
প্রায় তের বছর
আগের। আমি রোজ
অফিস করি। অফিস
শেষ হলে বাসায়
ফিরে আসি।
এভাবেই আমার
জীবন দিব্বি চলে
যাচ্ছিল।
আমার এক বন্ধু ছিল
যে পেশায় ট্যাক্সি
চালক। ওর বাবা
ছিলেন অত্যন্ত
ধার্মিক ও আল্লাহ
ভীরু মানুষ। এক
কথায় আল্লাহর খাস
বান্দা যাকে বলে।
সামি। আমার বন্ধু।
তাদের পরিবার খুব
একটা সচ্ছল ছিল না
তা বলবনা। তার
বাবা একটা
ছাপাখানায় কাজ
করতেন। তাদের
বাপ বেটার
উপার্জনে কোন
রকমে সংসার চলে
যেতো।
কিন্তু কয়েক বছর
আগে জীবনে চাকরি
নামক অধ্যায়ের
অবসান ঘটে।
সামির পরিবার
বলতে তার স্ত্রী এক
ছেলেসহ আরও এক
ভাই ও বোন ছিল।
যারা বয়সে তার
চেয়ে অনেক ছোট
ছিল।
পরিবারে হাল
ধরার জন্য সামি
ড্রাইভার হিসেবে
কাজ শুরু করে।
আমিও মাঝেমধ্যে
ওকে কল করে বাসায়
পৌঁছে দিতে
বলতাম।
যেদিন আমার অফিস
থেকে বের হতে হতে
বেশ রাত হয়ে যেত।
সেসময় রাস্তায়
গাড়ি পেতে বেশ
সমস্যা হতো। রাত
দশটা বাজতেই
কেমন জানি সব
ফাঁকা হয়ে যেত।
তাই গাড়ি না পেলে
সামিকে ফোন দিয়ে
বলতাম আমাকে
বাসায় পৌঁছে
দেয়ার জন্য।
এভাবেই আমার আর
সামির জীবন খুব
সুন্দর ভাবেই
চলছিল। কিন্তু
আমার আর সামির এই
শান্তির ধারা যে
বেশি দিন স্থায়ী
নয় তা আমরা কেউই
ঘুনাক্ষরেও বুঝতে
পারিনি।
একদিন আমার
অফিসে বিদেশ
থেকে ক্লায়েন্ট
আসায় সেদিন আমার
অফিস থেকে বের
হতে হতে রাত দশটা
চল্লিশ বাজে।
গাড়ি পাবনা আগেই
জানতাম। তাই
সামিকে ফোন দিয়ে
চলে আসতে বলি।
বেচারা আমার জন্য
প্রায় ত্রিশ মিনিট
অপেক্ষা করেছিল।
বের হয়ে গাড়িতে
উঠে সরি বলতে সে
হেসে বলে কিসের
সরি? পকেট থেকে
পাঁচশো টাকা ছাড়
বিরানি খাব।
এটাই তোর শাস্তি।
আমি হাসতে হাসতে
তার দিকে একশো
টাকার তিনটি নোট
বের করে দিতেই সে
না নেয়ার জন্য জেদ
করতে থাকে। আমিও
জানি সে মজা করেই
আমাকে এ কথা
বলেছে কিন্তু আমি
তাকে টাকাটা
নিতে খুব জোর
করেছিলাম। কারণ
ওর পরিবারের
কথাতো আমার
অজানা নয়।
এভাবে আমাদের
হাসি ঠাট্টা চলে।
আর এই হাসি
ঠাট্টাই আমাদের
জীবনের কাল হয়ে
দাঁড়ায়। চলমান
হাসি ঠাট্টায়
অসাবধানতা বশত
সামির গাড়ির
সাথে কিছু একটার
ধাক্কা লাগে।
আমি আর সামি দ্রুত
গাড়ি থেকে নেমে
যাই। নেমে দেখি
সেখানে একটি
সাদা ধবধবে
বিড়ালের বাচ্চা
মরে পড়ে আছে।
বিড়াল ছানাটি
ছিল অস্বাভাবিক
রকমের সুন্দর ও তার
চেহারা এতো বেশি
মায়া ছিল যে দেখে
যে কেউ মুগ্ধ হতে
বাধ্য।
আমি আর সামি তা
দেখে আফসোস করতে
থাকি এই সুন্দর
একটা প্রাণীর
জীবন কেড়ে নেবার
জন্য।
নিজেদের খুব
অপরাধী বলে মনে
হতে লাগলো কেননা
আমরা যদি ঠাট্টা
না করতাম তাহলে
এমনটি নাও হতে
পারতো।
বিড়াল ছানাটিকে
রাস্তার একপাশে
রেখে চলে আসার
সময় দেখি আরও
একটি সাদা বিড়াল
সেই মৃত বিড়াল
ছানাটির পাশে
এসে দাঁড়াল।
গাড়ির হেডলাইটের
আলোতে স্পষ্ট
দেখলাম বড়
বিড়ালটির চোখ
দিয়ে গড়িয়ে
গড়িয়ে পানি
পড়ছে।
আমাদের দিকে সে
যেন প্রচন্ড ঘৃনা
নিয়ে তাকিয়ে
আছে। আর মনে মনে
যেন হাজারটা
অভিশাপ দিচ্ছে।
হঠাৎ..
চলবে....
#এটা_অন্য_কিছু_ছ
িল
পর্বঃ ০১
ভৌতিক লেখকঃ
হামিম।
আমার গল্পের
রিভিউ দিতে জয়েন
করুন
https://facebook.com/
groups/
265731762745363/